Sunday, December 22
Shadow

নিউমোনিয়ার লক্ষণ কী নিউমোনিয়া হলে কী করবেন

বিশ্বে বছরে প্রায় ৪৫ কোটি লোক নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন। মারা যান প্রায় ৪০ লাখ। পাঁচ বছরের কম বয়সের শিশু ও বৃদ্ধই নিউমোনিয়ায় বেশি আক্রান্ত হন এবং শিশুরা বেশি মারা যায়। নারীদের চেয়ে তুলনামূলকভাবে পুরুষরা এতে বেশি আক্রান্ত হন।

ফুসফুস বা শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত জটিল একটি রোগ নিউমোনিয়া। ফুসফুসের প্যারেনকাইমা বা বায়ুথলিতে বিভিন্ন জীবাণু যেমন—ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ইত্যাদি সংক্রমণের ফলে বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, কাশি এসব উপসর্গ দেখা দেয়। বারবার ঠান্ডা লাগা, বুকে শ্লেষ্মা জমে থাকার কারণে নিউমোনিয়া হয়। ঠান্ডা লাগলেই যে সবার নিউমোনিয়া হবে, তা কিন্তু নয়। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, মূলত বয়স্ক ও শিশুরাই এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়।

নিউমোনিয়ার লক্ষণ

সাধারণ সর্দি-জ্বরের সঙ্গে নিউমোনিয়ার বেশ কিছু তফাত থাকে। একটু লক্ষ্ রাখলেই তাই রোগ নির্ণয় করা সহজ। নিউমোনিয়ার প্রাথমিক লক্ষণ অতিরিক্ত জ্বর। ওষুধে জ্বর নামলেও আবার ওষুধের প্রভাব কাটলেই হু-হু করে বেড়ে যায় জ্বর। ১০৩-১০৫ ডিগ্রি উঠতে পারে জ্বর। এর সঙ্গে বমি, শ্বাসকষ্ট বা দম নিতে কষ্ট হওয়া, বুকে ব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ থাকতে পারে। কখনো কখনো তীব্র মাথাব্যথা, ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়া, খাওয়ায় অরুচিও নিউমোনিয়ার লক্ষণ। অবস্থা গুরুতর হলে কাশির সঙ্গে রক্তও উঠতে পারে।

শিশুদের ক্ষেত্রে শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত নেওয়া, শ্বাস গ্রহণের সময় বাঁশির মতো শব্দ হওয়া, শ্বাস নিতে কষ্টবোধ বা কষ্টকর শ্বাস-প্রশ্বাস, বুকের খাঁচা দেবে যাওয়া, বুকে ব্যথা, খেতে না চাওয়া বা খেতে না পারা, শিশুর চঞ্চলতা কমে যাওয়া বা নিস্তেজ হয়ে যাওয়া, বমি করার মতো উপসর্গ থাকতে পারে।

এসব লক্ষণ দেখা দিলেই দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। একমাত্র চিকিৎসকই বুঝতে পারেন ব্যক্তি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে কিনা। রোগ নিশ্চিত হতে কিছু পরীক্ষা করাতে হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির কাশি বা হাঁচি থেকে এ রোগ অন্যদের মধ্যে ছড়াতে পারে।

নিউমোনিয়ার ঘরোয়া চিকিৎসা

  • আক্রান্ত রোগীকে ধূমপান বা ধূমপানের ধোঁয়া থেকে দূরে রাখতে হবে। যে কোনো ধরনের দূষণ যেমন ধোঁয়া, ধুলাবালি, মশা মারার কয়েল রোগীর ঘর থেকে বাদ দিতে হবে।
  • পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন নিউমোনিয়া রোগীর জন্য খারাপ। তাই প্রচুর পানি ও পুষ্টিকর তরল খাবার খাওয়াতে হবে।
  • জ্বর কমানোর ওষুধ ঘন ঘন খাইয়ে জ্বর নামানোর চেষ্টা না করে বরং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ খাওয়ানো প্রয়োজন।
  • রোগীকে ঠান্ডা আবহাওয়া থেকে দূরে রাখতে হবে।
  • হার্ট ও লিভারের রোগে আক্রান্ত রোগী ও ডায়াবেটিকরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিউমোনিয়া প্রতিরোধক চিকিৎসা নিতে হবে।
  • শিশুদের ক্ষেত্রে বারবার স্তন্যপান করান। ঘরের পরিবেশ যেন উষ্ণ ও পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল করে সে ব্যবস্থা করুন।
  • শিশুর গায়ের তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের বেশি হলে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

লেখক : ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ। প্রতিষ্ঠাতা, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!