শিশু আগের মতো স্বাভাবিক ছোটাছুটি করছে না বা অযথা কান্নাকাটি করছে? অনেক সময় হাত-পায়ের ব্যথার কথা বলছে? লক্ষণ মোটেও ভালো নয়। হাড়ের জটিল রোগ রিকেটস নয় তো? চিকিৎসকের বয়ানে শুনুন বিস্তারিত।
রিকেটস কী
ভিটামিন ডি শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। শরীরে এর ঘাটতি হলে ক্যালসিয়ামের মাত্রাও কমে যেতে শুরু করে। তখন বেশ কিছু সমস্যা দেখা দেয়। প্রাপ্তবয়স্কদের অর্থাৎ যাদের হাড়ের গঠন পরিপূর্ণ তাদের ক্ষেত্রে এ রোগকে অস্টিওম্যালাশিয়া বলে। আর শিশুদের ক্ষেত্রে চিকিৎসাবিজ্ঞানে রোগটি রিকেটস নামে পরিচিত। সাধারণত ছয় মাস থেকে তিন বছরের শিশুরা রিকেটসে আক্রান্ত হতে পারে।
শিশুর রিকেটসের লক্ষণ
রিকেটসের সাধারণ লক্ষণের মধ্যে রয়েছে—শিশুর হঠাৎ দৌড়ঝাঁপ কমিয়ে দেওয়া, হাতে-পায়ে ব্যথা, শিশুর দাঁড়ানো বা হাঁটা শিখতে দেরি হওয়া। কিছু ক্ষেত্রে শিশুর হাত-পায়ের হাড় বাঁকা হয়ে যেতে পারে। এসবের পাশাপাশি খিঁচুনিও থাকতে পারে। তিন বছর বা এর কম বয়সী শিশুদের এমন লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। এক্সরে, সিরাম ভিটামিন-ডি লেভেল এবং অন্যান্য পরীক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসক রোগ শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
শিশুর রিকেটস প্রতিরোধের উপায়
প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি গ্রহণ করা শিশুর রিকেটস প্রতিরোধের প্রধান উপায়। শিশুকে নিয়মিত রোদে খেলতে বা হাঁটতে নিয়ে যেতে হবে। সকাল ৯টা থেকে ১১টার রোদে ভিটামিন ডি বেশি থাকে।
এ ছাড়া গর্ভবতী মা ও শিশুদের পর্যাপ্ত ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিম, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, সবুজ শাকসবজি, ডাল, ছোট মাছ খাওয়াতে হবে। খাদ্যতালিকায় তৈলাক্ত মাছ, কলিজা, ডিমের কুসুম, মাখন ও মাশরুম রাখলে খাবার থেকে বেশ খানিকটা ভিটামিন ডি পাওয়া যাবে। শিশুদের ছয় মাস বয়স পূর্ণ হলে মায়ের বুকের দুধের ভিটামিন ডি-সমৃদ্ধ এসব খাবার খাওয়াতে হবে।
লেখক : এমবিবিএস, এফসিপিএস পার্ট-২ (মেডিসিন), ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।