
মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড পেরিয়ে বছিলা তিন রাস্তার মোড় থেকে বাঁ দিকে এগোলেই বেড়িবাঁধের প্রধান সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে সাদেক খান কৃষি মার্কেট। স্থানীয়রা একে আড়ত নামে বেশি চেনেন। এখানে অনেক পণ্য পাওয়া যায় এমন দামে, যা কারওয়ান বাজারের চেয়েও সাশ্রয়ী।
আমরাও সেই বাজারে গিয়েছিলাম। বেড়িবাঁধে উঠতেই ধুলাবালুর রাজ্যে পা রাখলাম। গলায় মাফলার জড়িয়ে বাজারে নামলাম ধুলো থেকে বাঁচতে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছুই এখানে
তাজা শাকসবজি, নদীর মাছ, মাংসসহ সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যই মেলে এখানে। পাইকারি দরে বিক্রি হয় বলে এক কেজির কম কেনা যায় না। রায়েরবাজারের বাসিন্দা কানিজ আমীন জানান, তাদের ঘরোয়া বাজারের বেশিরভাগই এখান থেকে আসে। ৫ কেজি করে আলু-পেঁয়াজ কিনে রাখেন। মাছ-মাংস নিজেরাই পছন্দ করে কিনলেও মুরগি অর্ডার দিলে দোকানদার জবাই করে বাসায় পৌঁছে দেন। তাজা সবজি যখন দরকার, তখনই নিয়ে আসা যায়।
আলুর আড়তেই বাজারের শুরু
বাজারে এখন নতুন আলুর সরবরাহ। হলুদ আর লাল রঙের আলু বেশি দেখা যায়। প্রতি কেজি ২০ টাকা, ৫ কেজি কিনলে ৯০–১০০ টাকা। ছোট গুটি আলু ৫ কেজি ৫০ টাকায় পাওয়া যায়। বগুড়ার লাল আলুর দাম ৫ কেজি ১৫০ টাকা। বস্তায় কিনলে দরকষাকষি করে ১৪–১৬ টাকায় নামানো যায় কেজি প্রতি দাম।
আলু বিক্রির প্রক্রিয়াও বেশ মজার। দোকানদার আলুর বস্তা কাঁধে তুলে ওজন মেশিনে দাঁড়িয়ে নিজের ওজন বাদ দিয়ে শুধু আলুর ওজন জানান—৫৫ বা ৬০ কেজি। এরপর বস্তার গায়ে ক্রেতার নাম লিখে রাখা হয়। পণ্য গাড়িতে তোলার জন্য থাকেন সহকারী, যেমন বরিশালের আবদুল মালেক, যিনি বস্তাপ্রতি ২০ টাকা পান।
পেঁয়াজ, রসুন, আদার আড়ত
ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, নাটোর থেকে আসে পেঁয়াজ-রসুন। পেঁয়াজের দাম ৪০–৪২ টাকা কেজি, রসুন ১৯০–২১০ টাকা। আদা বিক্রি হয় ৭০–১৩০ টাকায়।
শীতের সবজির সমাহার
শীতের কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ ভালো, দামও সাশ্রয়ী।
- ফুলকপি: ১০–২০ টাকা
- বাঁধাকপি: ১৫–২০ টাকা
- ব্রকলি: ১৫–৩০ টাকা
- টমেটো: ১৫–৩০ টাকা কেজি
- শালগম: ৫ টাকা প্রতিটি
- শিম: ১০–৩০ টাকা
- শসা/ক্ষীরা: ২০–৩০ টাকা
- বেগুন: ৩০–৪০ টাকা
- চিচিঙ্গা/ঝিঙে: ৪০ টাকা
- লাউ/পেঁপে: ৩০ টাকা
- কাঁচা মরিচ: ৪০ টাকা
- মুলা: ২–১০ টাকা
শাকসবজির মধ্যে রয়েছে লালশাক, ডাঁটাশাক, কলমিশাক, পালংশাক, মেথিশাক, লাউশাক ইত্যাদি। দাম ৫–১৫ টাকার মধ্যে।
রঙিন সবজির বাহার
সাদার বাইরে রয়েছে বেগুনি শালগম, রঙিন বিটরুট, বেগুনি-হলুদ ফুলকপি।
- বেগুনি শালগম: ৬ টাকা কেজি
- বেগুনি ফুলকপি: ৭০–৯০ টাকা
- কুমড়ার ফুল (২০টি): ১০০ টাকা
- বিটরুট (১০টি): ২০০ টাকা
এখানে পণ্য সস্তায় পাওয়া যায়, তাই নিয়মিত ক্রেতাদের ভিড় লেগেই থাকে।